আন্তর্জাতিক
লন্ডনে ডানপন্থিদের বিশাল সমাবেশ
লন্ডনে ডানপন্থিদের বিশাল সমাবেশের নেপথ্যে কে এই টমি রবিনসন?

সংগৃহীত
লন্ডনে ডানপন্থি কর্মী টমি রবিনসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেয়। এটি যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ডানপন্থিদের অন্যতম বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ শীর্ষক এই সমাবেশ মূলত অভিবাসনবিরোধী আন্দোলন হিসেবে ঘোষিত হলেও শেষ পর্যন্ত তা সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। পুলিশের হিসেবে বিক্ষোভে ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার পর্যন্ত মানুষ অংশ নিয়েছেন।
অপরদিকে, হোয়াইটহলে প্রায় পাঁচ হাজার পাল্টা বিক্ষোভকারীও সমবেত হন। উভয় পক্ষকে আলাদা রাখতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে রবিনসনের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে।
সহিংসতায় অন্তত ২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন গুরুতর আহত হন। তাদের কারও দাঁত ভেঙে গেছে, কারও নাক ভাঙার আশঙ্কা করা হচ্ছে, আবার কারও মাথায় গুরুতর আঘাত ও মেরুদণ্ডে সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুলিশ অন্তত ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, হামলা এবং ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
কে এই টমি রবিনসন?
টমি রবিনসনের প্রকৃত নাম স্টিফেন ইয়াক্সলে-লেনন। তিনি ব্রিটিশ এক ডানপন্থি কর্মী ও ইংলিশ ডিফেন্স লিগের (ইডিএল) প্রতিষ্ঠাতা। সংগঠনটি মূলত ইসলামবিরোধী বক্তব্য এবং সহিংস বিক্ষোভের জন্য পরিচিতি পেয়েছিল ২০০০-এর দশকের শেষভাগ এবং ২০১০-এর দশকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণামূলক বক্তব্যের কারণে টমি রবিনসনকে ২০১৮ সালে টুইটার, এবং ২০১৯ সালে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ২০২২ সালে ইলন মাস্ক টুইটার অধিগ্রহণের পর তার অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু হয় এবং বর্তমানে তার অনুসারীর সংখ্যা এক মিলিয়নের বেশি।
রবিনসন শুধু ব্রিটেনেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছেন। তিনি ফক্স নিউজ ও ইনফোওয়ার্সের মতো গণমাধ্যমে উপস্থিত হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মিডল ইস্ট ফোরাম থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। সাবেক প্রাউড বয়েজ নেতা এনরিক তারিও তাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২০২৪ সালের আগস্টে সাউথপোর্টে এক ছুরিকাঘাতের ঘটনায় রবিনসন মিথ্যা দাবি ছড়িয়ে দেন যে হামলাকারী একজন মুসলিম। এসময় তিনি সমর্থকদের ‘বিদ্রোহে’ উসকে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
অপরাধের ইতিহাস
টমি রবিনসনের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের রেকর্ড রয়েছে।
• ২০০৫ সালে হামলার দায়ে দণ্ডিত হন।
• ২০১২ সালে পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে শাস্তি পান।
• ২০১৪ সালে মর্টগেজ জালিয়াতির দায়ে দণ্ডিত হন।
• ২০১৮ সালে আদালত অবমাননার অভিযোগে সাজা হয়।
এ পর্যন্ত তিনি চারবার কারাদণ্ড ভোগ করেছেন।







